Bangla golpo
শুনশান রাস্তায় রিতু আবার বের হলো রাস্তায় এখন আর মানুষ চলাচল নেই বললেই চলে,
ইবু স্যার টা জানি কেমন আসলো না কেনো,
বলতে বলতেই সামনে এসে পড়ে ইবু স্যার,
ইবু- কেমন আছো?
রিতু-মনে মনে কেমন আছো মারাইয়ো না একটু আগে বিপদে পড়ছিলাম,
ইবু- কি ব্যাপার কথা বলছো না কেনো,
রিতু- জি ভালো, আপনি?
ইবু- হুম ভালো,হঠাৎ এই এলাকায় কেনো, কোন ইনফরমেশন দরকার নাকি?
রিতু – তা তো দরকারি কিন্ত খুব জরুরি,
ইবু- ওহ আচ্ছা তা কি এত জরুরি আমাকে বলা যাবে,
রিতু- বললে নিতে পারবেন তো,
ইবু- আচ্ছা হাটি আর কথা বলি,হুম বলো,
রিতু- সব খোলে বলল,
ইবু মাথায় হাত দিয়ে OmG আচ্ছা চল দেখা যাক কি হয়,
দুজন কথা বলতে বলতে নাইট ক্লাবের ভিতর ঢুকলাম,
এখানে কম বেশি সব অপরাধী আসে আবার সাধারণ মানুষও আসে,
এখানে পুলিশ আসতে ভয় পায়,
এই এলাকা খুবই বিপদজনক কখন কি হয় বলা যায় না,
এই পুরো এলাকা একজন নিয়ন্ত্রণ করে,
ভিতরে ঢুকে নীলের ছবি দেখাইলাম অনেকজন কে কিন্ত কেউ চিনে না,
হতাশ মনে বের হয়ে পড়ে দুজনেই,
রিতু ইবু স্যার কে বলল,চলেন থানায় যাই নীলের সাথে দেখা করে আসি,
রিতু থানায় গেলো রাত তখন ১০টা বাজে থানায় গিয়ে দেখলো নীল বসে আছে জেলের ভিতর দেয়াল হেলান দিয়ে,
রিতু তখন ইবু স্যার কে বললেন উনিই আমার বর,
তখন ইবু স্যার রিতুর কানে কানে বলল তুমি যা ভাবছো তা না এই হাদারাম,
নীল কে হাদারাম রিতু ইবু স্যারের দিকে আড় চোখে তাকায়,
ইবু স্যার তা বুঝতে পেরে , সরি সরি আসলে এ কি করে কোন ক্রিমিনাল হয় দেখতেই কি বলবো আবার রাগ করবে,
রিতু-হুম সেটা আমিও ভাবছি কি করে সম্ভব,
নীল রিতু কে দেখে এগিয়ে আসলো, আর মায়া ভরা দৃষ্টি দিয়ে বলল,আমার না অনেক ক্ষুধা লাগছে খাবার আনছেন,
Bangla golpo
তখন রিতু নীলের মায়ার কাছে হার মেনে বিপাকে পড়ে যায় কারণ খাবার আনে নাই,
রিতু বলল,তুমি জাস্ট ৫মিনিট ওয়েট করো আমি খাবার নিয়ে আসছে,
ইবু কে রেখেই থানা থেকে বের হয়ে যায়, ইবু পিছন পিছন ডাকতে থাকে রিতু ভুলেই গেছে যে ইবু স্যার আছে,
রিতু ইবুর ডাক শুনে দাঁড়ায়,
ইবু- আমাকে রেখে কোথাই যাচ্চো,
রিতু – ও স্যার সরি খেওয়াল ছিলো না,আমাকে খাবার আনতে নীলের জন্য,
এনে দিতে পারবেন,
ইবু স্যার মুচকি হেসে, তুমি যা আজ পর্যন্ত বলছো তা কোন দিন শুনি নি করি নি এমন হয়েছে তুমি এখানে অপেক্ষা করো আমি নিয়ে আসছি,
রিতু ইবু স্যারের কথা শুনে দাঁড়ালো রিতু জানে রাত যতই হোক ইবু স্যার হতাশ করবে না,
থানার বাহিরে রিতু দাঁড়িয়ে আছে পাশেই দাঁড়িয়ে আছে একজন কনস্টেবল বয়স্ক করে,
রিতু- চাচা ভালো আছেন?
চাচা ডাক শুনে উনি উত্তর দিলেন আলহামদুলিল্লাহ মা ভালো আছি,আপনি ভালো আছেন।
রিতু-বেশি ভালো নেই, চাচা
–কেনো মা কি হয়েছে,
-থানায় আমার স্বামী,
-কে ঐ নীল রক্ত যার,
–হুম,
-আচ্ছা মা আপনাদের বিয়ে হয়েছে কত বছর,
রিতু তখন হাত দেখিয়ে বলল,এই যে দেখেন এখনো মেহেদীর রং উঠে নাই,
বলতে গেলে বাসর ঘর থেকে ধরে নিয়ে আসছে,
–কিন্ত মা, তাহলে বাচ্চা টা কার।
–কিসের বাচ্চা মানে কার,
-ঐ নীলের সাথে দেখা করতে আসে,
–কি বলেন চাচা,
-আমি নিজের চোখে দেখছি বাবা বলে ডাকছিলো,
রিতু কথা টা শুনে অবাক হয়ে যায় মানে বিশ্বাস করতে পারছে না,
নীলের মেয়ে আসবে কোথা থেকে, পিচ্ছি একটা ছেলে,
এমন সময় ইবু চলে আসলো কলা আর পাউরুটি ছাড়া আর কিছুই পেলো না,
রিতু নিয়ে নীল কে দিলো নীল খাচ্ছে এর মধ্যে রিতু জিজ্ঞেস করলো থানায় কোন বাচ্চা আসছিলো,
নীল খেতে হুম আসছিলো তো,বাচ্চা টা অনেক কিউট কিন্ত ওর বাবা অনেক পচা খুন করে নাকি জেলে আসছে,
।
রিতু তখন মনে আবার বিশ্বাস ফিরে পেলো,
হয়তো কনস্টেবল চাচার দেখার ভুল নীল তো তা বলল,
নীলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে থানা থেকে বের হলো,
ইবু রিতু কে বাসা পর্যন্ত পৌঁছে দিলো,
বাসায় গিয়ে রিতু ভেজা জামা কাপড় চেন্স করতে যাবে জামার হাতায় নীল কিছু একটা দেখতে পেলো,
রিতু নীল রং টা আঙুল দিয়ে এনে নাকের কাছে ধরলো,
রক্তের গন্ধ আসছে,
তখন রিতুর মাথায় টনক করে একমাত্র নীলের রক্তই তো নীল।
আর হোটেলের যে কালো পোশাক পড়া লোকটা ছিলো সেই তো রিতুর কব্জির উপরে ধরে সরিয়ে ছেলেটির বুকে লাথি মেরে ছিলো,
তার মানে ঐটা নীল।
তখন রিতু আবার ইবু কে ফোন দেয়,
ফোন করে বলে,ইবু স্যার আমার দশজন অফিসার লাগবে,
ইবু- কেনো?
রিতু- শুধু একজন কে ধমকাবো,পারলে আপনিও চলে আসেন,
ইবু স্যার ডিবি পুলিশ উচ্চু পদে আছেন,
রিতু আবার রিং কোট গায়ে চাপিয়ে বের হলো কারণ বাহিরে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে,
রাত তখন ২টা বাজে সেই হোটেলে গেলো,বৃষ্টি থাকায় সেদিন তেমন কোন কাস্টমার ছিলো না,
এই সুযোগ টা তখন রিতু কাজে লাগায়,
রিতু একটা পিস্তল নিয়ে হোটেল মালিকের মাথায় ধরে বলে,
প্রায় ৮টার দিকে এখানে একজন মারা যায় লাথি মেরে বুকের ছাতি ভেঙে যাওয়ার ফলে কিন্ত যে লাথি মেরেছিলো সে কে,
সত্যি না বললে একদম মাথার খুলি উড়িয়ে দিবো,
–আপা আপা শুনেন,আমি উনাকে দেখি নাই,উনি তো মুখে মাস্ক পড়া ছিলো,
-তাহলে ঐ ছেলেগুলো বস বস বলছিলো কেনো,কি দেখে বস বস বলল,
–উনার চোখ নীল উজ্জ্বল ছিলো, আর উনি আমাদের বস,উনার চেহারা আজ পর্যন্ত কেউ দেখেনি,আর উনার রাগ হলে চোখ নীল হয়ে যায়,
রিতু- উনি যে প্লেটে খাচ্ছিলো সেটা আমার চাই আর কাটা চামচ,
-আপা প্লেট টা নিতে পারবেন কিন্ত চামচ টা বাকিয়ে বলের মতো করে ফেলছে,আর নীল রং লেগে আছে,,
রিতু- কই কই সেটা আমার লাগবে এখনই দে,
হোটেল মালিক চামচ দিলো রিতু ইবু স্যার কে বলল স্যার এটা নিশ্চয়ই যে বাকিয়েছে চামচ এর কাটা গুলো তার হাতে ক্ষত তৈরি করেছে,,
ইবু- হুম তা তো অবশ্যই।
Bangla golpo
রিতু- এবার স্যার থানায় চলেন,
ইবু- এত রাতে যাওয়া যাবে না তোমার,
রিতু প্লেট আর চামচ নিয়ে বাসায় গেলো নিজের কাছে রেখে দিলো,
সকাল হতেই রিতু সেগুলো ফরেনসিকে নিয়ে গেলো,
সেখান থেকে আবার সোজা থানায়,
রিতুর মাথায় অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে,
কিন্ত গিয়ে দেখলো নীল নেই,একদম ফাঁকা,
কনস্টেবল বলল আসামি পালিয়েছে শেষ রাতে,
এবার রিতুর সন্দেহ ঠিক হল,
নীল পালিয়েছে রিতুর মাথা ঠিক নেই,
কারণ নীল এমন ছেলে তা রিতু কল্পনাও করতে পারে নাই,
রিতুর লাইফটাই বরবাদ হয়ে গেলো বলতে মানুষ বলবে দেখো এই মেয়ের আগে একটি বিয়ে হয়েছিলো,
কিন্ত রিতুর মনে জেদ চাপলো নীল কে তা জেনে ছাড়বে,
তাই নীলের বাড়ি চলল সেখান থেকে সব কিছু গুছিয়ে নিজের বাবার বাড়ি যাবে সেখানে ২দিন থেকে থানার কাছে একটা বাসা নিবে,
নীলের বাসায় গেলো কিন্ত দরজা টা খোলা যেখানে রিতু তালা ঝুলিয়ে গিয়েছিল,
রিতু আস্তে করে ভিতরে ঢুকলো এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখলো তারপর শোবার ঘরে গেলো দেখলো নীল শুয়ে আছে,
নীল কে দেখে রিতু অবাক হয়ে গেলো তারপর নীল কে ডাকলো।
-এই এই নীল এই নীল।
-হ্যাঁ হ্যাঁ কে কে? (ভয় পেয়ে)
নীল চোখ খোলে তাকিয়ে দেখলো রিতু
-ওহ আপনি।
-হুম আমি কিন্ত তুমি থানা থেকে পালিয়েছো কেনো।
Bangla golpo
-এই আপনাকে কে বলল, আমি থানা থেকে পালিয়েছি,
-আমি নিজে থানায় গিয়েছিলাম,
-আপনি ভালো করে জানেন, আমাকে ছেড়ে দিয়েছে,
রিতু থানায় ফোন দিলো ওসি কে আর নীলের নাম বললেন, ওসি বলল নীল কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে,
Bangla golpo
রিতু যেনো দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বাঁচলো,
বাসায় দাদু না থাকায় নীল জিজ্ঞেস করলো,
নীল-আচ্ছা দাদু কই?
রিতুর চোখ গুলো তখন বড় বড় হয়ে গেলো এখন নীল কে কি উত্তর দিবে,
রিতু-……… চুপ।
নীল- কি হল বলছেন না কেনো দাদু কই?
রিতু-……. চুপ করেই আছে?
নীল- দাদু কই? কথা কানে যাচ্ছে না?(ধমক দিয়ে)
রিতু- চমকে যায় নীলের ধমক খেয়ে।
রিতু-আসলে দাদু কে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না,তোমাকে যেদিন জেলে যাও তারপর দিন থেকে,
নীল- কি? দাদু কে পাওয়া যাচ্ছে না,
Bangla golpo
রিতু – হুম।
নীল- আমাকে বলেন নাই কেনো,
রিতু- এখন রিতু পড়ে যায় বিপাকে কি বলবে,তাই রিতু বলল,
রিতু- বলি নাই এটা আমার ভুল হয়েছে,
নীল- ভুল হয়েছে নাকি আমার দাদু কে খুন করে গুম করে ফেলছেন,
রিতু- কি সব বাজে কথা বলছো আমি কেনো খুন করতে যাবো,
নীল- সম্পত্তির লোভে?
রিতু- হোয়াট?
নীল- ইয়েস বিকস,আমি জেলে দাদু গুম এই বিশাল সম্পত্তির মালিক কে থাকে তাহলে? ইউ?
তারপর আপনার পছন্দ মতো কোন ছেলে কে বিয়ে,
নীলের কথা ধরতে গেলে সত্যি,
রিতু- নীল দেখো আমি এমন টা করি নাই, তুমি আমাকে ভুল বুঝছো,
নীল- না, আমি ভুল বুঝছি না,আপনি চাইলেই আমাকে জেল থেকে বের করতে পারতেন,
কিন্ত আপনি তা করেন নাই,
নিজের ক্ষমতায় জেল থেকে বের হয়েছি,আর রাতের মধ্যে আমার দাদু কে চাই না হলে মামলা করতে বাধ্য হবো,
রিতু নীল যা মনে করেছিলো নীল তেমন না,আর নীল কে বলতেও পারছে ন,যে আমি তোমাকে সন্দেহ করেছিলাম
তুমি এই তুমি সেই,
তাহলে আরো বিপদে পড়ে যাবে রিতু,
Bangla golpo
উপায় না বুঝে রিতু মাথা ঘুরে পড়ে গেলো কিন্ত এটা একটা রিতুর অভিনয় ছিলো,যাতে নীলের কাছে কোন কৈফিয়ত না দিতে হয়,
নীল রিতু কে ধরে বেডে শুইয়ে দিয়ে কালো লম্বা চাদর মুরি দিয়ে বের হলো রিতু তখন আড় চোখে সব দেখছিলো,
সব থেকে বড় একটা আশ্চর্য কথা হল রুমের ভিতর একটা গোপন কক্ষ আছে যা রিতু জানে না কিন্ত আজ তা জানতে পেরেছে,
রিতু মনে মনে ঠিক করলো নীল একবার বের হোক তারপর দেখা যাক,
নীল বের হওয়ার সাথে সাথে রিতু উঠে দরজা লক করে গোপন কক্ষে যেতে চায় কিন্ত সেখানে কোন দরজা বা যাওয়ার কোন রাস্তা খোঁজে পেলো না,
কিন্ত কিছুক্ষণ আগেই দিব্যি দরজা দেখতে পেলো,
এখন রিতুর মাথা সত্যি সত্যি ঘুরছে,
Bangla golpo
ভেবে কিছু পাচ্ছে না থো মেরে বসে আছে রিতু,
দুপুর গড়িয়ে রাত হয়ে গেলো কিন্ত নীলের কোন খবর নেই,
রিতু এটা বুঝে গেছে নীল কোন সাধারণ মানুষ না,
রাত ১১টা ১৯ মিনিটে একটা কল আসে নীলের বিপদ,হসপিটালে আছে নীল।
অজানা এক অনুভূতির টানে রিতু ছোটে গেলো হসপিটালে সেখানে গিয়ে অবাক কান্ড পিচ্ছি একটা মেয়ে নীল কে রক্ত দিচ্ছে সব চেয়ে অবাক করা কথা হল মেয়েটির রক্তও নীল,
পিচ্ছি মেয়েটির বয়স আনুমানিক ৫-৬ বছর,
আর যিনি ডক্টর মনে হচ্ছে না উনি এই হসপিটালের দেখতে কেমন জানি ইয়া বড় বড় গোঁফ,
হঠাৎ একটা ব্যাগ চোখে পড়লো মনে হচ্ছে বাঘের চামড়া দিয়ে বানানো,
নার্স গুলো কোন কথা বলছে না হা করে তাকিয়ে আছে,
নীলের শরীরে যে রক্ত যাচ্ছে মনে হচ্ছে নীল রং যাচ্ছে,
রক্তের ব্যাগ দেখে মনে হচ্ছে নীল রং এর ডিব্বা ঝুলিয়ে রাখছে,
Bangla golpo
রক্ত দেওয়া শেষ হল, নীলের শরীরে
রিতু কিছু বলতে যাবে।
ডাক্তার বলল হুসসস চুপ।
নীলের শরীরে জায়গায় জায়গায় আঁচড়ের দাগ মনে হচ্ছে হিংস্র কোন জানোয়ার এর থাবা,
হঠাৎ রিতুর ওয়াশরুম চাপ হলো তাই সে উঠে ওয়াশরুমে গেলো কিন্ত ফিরে এসে যা দেখলো তা দেখে চোখ কপালে উঠে গেলো,