Jasim Uddin জসীম উদ্ দীন (জানুয়ারি ১, ১৯০৩ – মার্চ ১৩, ১৯৭৬) একজন বিখ্যাত বাঙালি কবি। তিনি বাংলাদেশে ‘পল্লী কবি’ হিসেবে পরিচিত। তাঁর লেখা কবর কবিতাটি বাংলা সাহিত্যে এক অবিস্মরণীয় অবদান। পুরো নাম জসীম উদ্
Continue readingCategory: জসীম উদ্দিন
জসীম উদ্দিন (১ জানুয়ারি ১৯০৩ – ১৩ মার্চ ১৯৭৬) একজন বাঙালি কবি, গীতিকার, ঔপন্যাসিক ও লেখক। ‘পল্লীকবি’ উপাধিতে ভূষিত, জসীম উদ্দীন আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে লালিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ আধুনিক কবি।
ঐতিহ্যবাহী বাংলা কবিতার মূল ধারাটিকে নগরসভায় নিয়ে আসার কৃতিত্ব জসীম উদ্দীনের। তাঁর নকশী কাঁথার মাঠ ও সোজন বাদিয়ার ঘাট বাংলা ভাষার গীতিময় কবিতার উৎকৃষ্টতম নিদর্শনগুলোর অন্যতম। তাঁর কবিতা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষিত জসীম উদ্দীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ বছর শিক্ষকতা করেন;
১৯৪৪ সালে শিক্ষকতা ছেড়ে জসীম উদ্দিন বঙ্গীয় প্রাদেশিক সরকার এবং পরে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের প্রচার বিভাগের কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৬২ সালে অবসরগ্রহণ করেন। জসীম উদ্দীন ছিলেন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার একজন দৃঢ় সমর্থক। তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা।
জসীম উদ্দীন প্রেসিডেন্টের প্রাইড অব পারফরমেন্স পুরস্কার (১৯৫৮), বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদক (১৯৭৬) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে (মরণোত্তর, ১৯৭৮) ভূষিত হন। তিনি ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন।
১৯৩১ থেকে ১৯৩৭ পর্যন্ত, দীনেশচন্দ্র সেনের সাথে লোক সাহিত্য সংগ্রাহক হিসেবে জসীম উদ্ দীন কাজ করেন। তিনি পূর্ব বঙ্গ গীতিকার একজন সংগ্রাহকও। তিনি ১০,০০০ এরও বেশি লোক সংগীত সংগ্রহ করেছেন, যার কিছু অংশ তার সংগীত সংকলন জারি গান এবং মুর্শিদা গান এ স্থান পেয়েছে। তিনি বাংলা লোক সাহিত্যের বিশদ ব্যাখ্যা এবং দর্শন খণ্ড আকারেও লিখে গেছেন।[৬]
১৯৩৩ সনে জসীম উদ্দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. দীনেশচন্দ্র সেনের অধীনে রামতনু লাহিড়ী গবেষণা সহকারী পদে যোগ দেন। এরপর ১৯৩৮ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ১৯৪৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে এবং তথ্য ও সম্প্রচার বিভাগে যোগ দেন। ১৯৬২ সালে অবসর গ্রহণের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করে গেছেন। তিনি গুরু মৃত্যুন জয় সিলের কাছে গুণগ্রাহী ছিলেন।[৪] ১৯৬৯ সনে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মান সূচক ডি লিট উপাধিতে ভূষিত করেন।
নকশী কাঁথার মাঠ
– জসীম উদ্দিন
সখী দীন দুঃখীর যারে ছাড়া কেহ নাই
সেই আল্লার হাতে আজি আমি তোমারে সঁপিয়া যাই।
মাকড়ের আঁশে হস্তী যে বাঁধে, পাথর ভাসায় জলে
তোমারে আজিকে সঁপিয়া গেলাম তাঁহার চরণতলে।
এত হাসি কোথায় পেলে – জসীম উদ্দিন
এত হাসি কোথায় পেলে এত কথার খলখলানি কে দিয়েছে মুখটি ভরে কোন বা গাঙের কলকলানি | কে দিয়েছে রঙিন ঠোঁটে কলমী ফুলের গুলগুলানি | কে দিয়েছে চলন বলন কোন সে লতার দোল দুলানী| কাদের ঘরে
Continue readingপ্রতিদান – জসীমউদ্দীন
আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা, আমি বাধি তার ঘর, আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর। যে মোরে করিল পথের বিবাগী; পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি; দীঘল রজনী তার তরে জাগি ঘুম যে
Continue readingকবর – জসীম উদ্দিন
এই খানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে, তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে। এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ, পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক। এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম
Continue readingনিমন্ত্রণ – জসীম উদ্দিন
তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়, গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়; মায়া মমতায় জড়াজড়ি করি মোর গেহখানি রহিয়াছে ভরি, মায়ের বুকেতে, বোনের আদরে, ভাইয়ের স্নেহের ছায়, তুমি যাবে ভাই
Continue readingফুটবল খেলোয়াড় – জসীম উদ্দিন
আমাদের মেসে ইমদাদ হক ফুটবল খেলোয়াড়, হাতে পায়ে মুখে শত আঘাতের ক্ষতে খ্যাতি লেখা তার। সন্ধ্যা বেলায় দেখিবে তাহারে পটি বাঁধি পায়ে হাতে, মালিশ মাখিছে প্রতি গিঠে গিঠে কাত হয়ে বিছানাতে। মেসের চাকর হয় লবেজান
Continue readingপালের নাও – জসীম উদ্দিন
পালের নাও, পালের নাও, পান খেয়ে যাও – ঘরে আছে ছোট বোনটি তারে নিয়ে যাও। কপিল-সারি গাইয়ের দুধ যেয়ো পান করে’ কৌটা ভরি সিঁদুর দেব কপালটি ভরে’! গুয়ার গায়ে ফুল চন্দন দেব ঘসে’ ঘসে’, মামা-বাড়ীর
Continue readingনক্সী কাঁথার মাঠ (০৫/১৪) – জসীম উদ্দিন
নক্সী কাঁথার মাঠ – পাঁচ আশ্বিনেতে ঝড় হাঁকিল, বাও ডাকিল জোরে, গ্রামভরা-ভর ছুটল ঝপট লট্ পটা সব করে | রূপার বাড়ির রুশাই-ঘরের ছুটল চালের ছানি, গোয়াল ঘরের খাম থুয়ে তার চাল যে নিল টানি |
Continue readingনক্সী কাঁথার মাঠ (০১/১৪) – জসীম উদ্দিন
এক বন্ধুর বাড়ি আমার বাড়ি মধ্যে ক্ষীর নদী, উইড়া যাওয়ার সাধ ছিল, পাঙ্খা দেয় নাই বিধি| — রাখালী গান এই এক গাঁও, ওই এক গাঁও — মধ্যে ধু ধু মাঠ, ধান কাউনের লিখন লিখি করছে
Continue readingনক্সী কাঁথার মাঠ (০২/১৪) – জসীম উদ্দিন
দুই এক কালা দতের কালি যা দ্যা কলম লেখি, আর এক কালা চক্ষের মণি, যা দ্যা দৈনা দেখি, —ও কালা, ঘরে রইতে দিলি না আমারে | — মুর্শিদা গান এই গাঁয়ের এক
Continue readingনক্সী কাঁথার মাঠ (০৩/১৪) – জসীম উদ্দিন
তিন ওই গাঁখানি কালো কালো, তারি হেলান দিয়ে, ঘরখানি যে দাঁড়িয়ে হাসে ছোনের ছানি নিয়ে ; সেইখানে এক চাষীর মেয়ে নামটি তাহার সোনা, সাজু বলেই ডাকে সবে, নাম নিতে যে গোনা | লাল মোরগের পাখার
Continue readingনক্সী কাঁথার মাঠ (০৪/১৪) – জসীম উদ্দিন
নক্সী কাঁথার মাঠ – চার চৈত্র গেল ভীষণ খরায়, বোশেখ রোদে ফাটে, এক ফোঁটা জল মেঘ চোঁয়ায়ে নামল না গাঁর বাটে | ডোলের বেছন ডোলে চাষীর, বয় না গরু হালে, লাঙল জোয়াল ধূলায় লুটায় মরচা
Continue readingনক্সী কাঁথার মাঠ (০৬/১৪) – জসীম উদ্দিন
নক্সী কাঁথার মাঠ – ছয় ঘরেতে রূপার মন টেকে না যে, তরলা বাঁশীর পারা, কোন বাতাসেতে ভেসে যেতে চায় হইয়া আপন হারা | কে যেন তার মনের তরীরে ভাটির করুণ তানে, ভাটিয়াল সোঁতে ভাসাইয়া নেয় কোন্
Continue readingনক্সী কাঁথার মাঠ (০৭/১৪) – জসীম উদ্দিন
নক্সী কাঁথার মাঠ – সাত কান্-কানা-কান্ ছুটল কথা গুন্-গুনা-গুন তানে, শোন্-শোনা-শোন সবাই শোনে, কিন্তু কানে কানে | “কি করগো রূপার মাতা? খাইছ কানের মাথা? ও-দিক যে তোর রূপার নামে রটছে গাঁয়ে যা তা! আমরা বলি রূপাই এমন
Continue readingনক্সী কাঁথার মাঠ (০৮/১৪) – জসীম উদ্দিন
নক্সী কাঁথার মাঠ – আট বিয়ের কুটুম এসেছে আজ সাজুর মায়ের বাড়ি, কাছারী ঘর গুম্-গুমা-গুম্ , লোক হয়েছে ভারি | গোয়াল-ঘরে ঝেড়ে পুছে বিছান দিল পাতি ; বসল গাঁয়ের মোল্লা মোড়ল গল্প-গানে মাতি | কেতাব পড়ার উঠল
Continue readingনক্সী কাঁথার মাঠ (০৯/১৪) – জসীম উদ্দিন
নক্সী কাঁথার মাঠ – নয় আষাঢ় মাসে রূপীর মায়ে মরল বিকার জ্বরে, রূপা সাজু খায়নি খানা সাত আট দিন ধরে | লালন পালন যে করিত “ঠোঁটের” আধার দিয়া, সেই মা আজি মরে রূপার ভাঙল সুখের হিয়া
Continue reading