কবি-পরিচিতি: যতীন্দ্র মোহন বাগচীর জন্ম ১৮৭৮ সালের ২৭ নভেম্বর নদীয়া জেলার জামশেদপুরে। অবশ্য তার পৈতৃক নিবাস হুগলী জেলার বলাগড় গ্রামে। কলকাতার ডাফ কলেজ থেকে ১৯০২ সালে তিনি বি.এ. ডিগ্রি লাভ করেন। বিচারপতি সারদাচরণ মিত্রের প্রাইভেট
Continue readingTag: প্রেমের কবিতা
দুঃখ করো না, বাঁচো – নির্মলেন্দু গুণ
দুঃখকে স্বীকার করো না, –সর্বনাশ হয়ে যাবে । দুঃখ করো না, বাঁচো, প্রাণ ভরে বাঁচো । বাঁচার আনন্দে বাঁচো । বাঁচো, বাঁচো এবং বাঁচো । জানি মাঝে-মাঝেই তোমার দিকে হাত বাড়ায় দুঃখ, তার কালো লোমশ
Continue readingবসন্তের একটি বাংলা উদ্ধৃতি – মহাদেব সাহা
চুনা-ওঠা দেয়ালের মতো প্রকৃতির এই খসখসে গালে আর কী রং মাখাবে চৈত্র, তোমার পকেটে ভাঁজ-করা শতবর্ষের শীতকাল, মাতাল হাওয়ায় যতই এই বার্ধক্য ঢেকে দিতে চাও তার মুখমণ্ডলে জমে আছে উত্তর গোলার্ধের অনন্ত বরফ তার শরীর
Continue readingমগ্নজীবন – মহাদেব সাহা
এই এটুকু জীবন আমি দিওয়ানার মতো ঘুরেই কাটিয়ে দিতে পারি দিগ্ভ্রান্ত নাবিকের মতো অকূল সমুদ্রে পারি ভাসাতে জাহাজ; আমার সমগ্র সত্তা পারি আমি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করে দিতে কোনো সুফী আউলিয়ার মতো ধ্যানের আলোয়, ঝরা বকুলের
Continue readingতোমাকে লিখবো বলে একখানি চিঠি – মহাদেব সাহা
তোমাকে লিখবো বলে একখানি চিঠি কতোবার দ্বারস্ত হয়েছি আমি গীতিকবিতার, কতোদিন মুখস্ত করেছি এই নদীর কল্লোল কান পেতে শুনেছি ঝর্ণার গান, বনে বনে ঘুরে আহরণ করেছি পাখির শিস্ উদ্ভিদের কাছে নিয়েছি শব্দের পাঠ; তোমাকে লিখবো
Continue readingসুন্দরের হাতে আজ হাতকড়া, গোলাপের বিরুদ্ধে হুলিয়া – মহাদেব সাহা
সুন্দরের হাতে আজ হাতকড়া, গোলাপের বিরুদ্ধে হুলিয়া, হৃদয়ের তর্জমা নিষিদ্ধ আর মননের সম্মুখে প্রাচীর বিবেক নিয়ত বন্দী, প্রেমের বিরুদ্ধে পরোয়ানা; এখানে এখন পাখি আর প্রজাপতি ধরে ধরে কারাগারে রাখে- সবাই লাঞ্ছিত করে স্বর্ণচাঁপাকে; সুপেয় নদীর
Continue readingতুমি হাতখানি রাখো – হুমায়ুন আজাদ
প্রিয়তমা, তুমি হাতখানি রাখো আমার গুমোট বুকে। শুনতে পাচ্ছো শব্দ? কে যেনো হাতুড়ি ঠুকে চলছে? সেখানে এক মিস্ত্রি থাকে,যে বানিয়ে চলেছে এক শবাধার । কার জন্যে জানো? আমার, আমার । উল্লাসে বিদ্বেষে নিরন্তর সে হাতুড়ি ঠুকছে
Continue readingফুল ফুটুক না ফুটুক – সুভাষ মুখোপাধ্যায়
ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত। শান-বাঁধানো ফুটপাথে পাথরে পা ডুবিয়ে এক কাঠখোট্টা গাছ কচি কচি পাতায় পাঁজর ফাটিয়ে হাসছে। ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত। আলোর চোখে কালো ঠুলি পরিয়ে তারপর খুলে – মৃত্যুর
Continue readingনদী-স্বপ্ন – বুদ্ধদেব বসু
কোথায় চলেছো? এদিকে এসো না! দুটো কথা শোনা দিকি এই নাও- এই চকচকে ছোটো, নুতন রূপোর সিকি ছোকানুর কাছে দুটো আনি আছে, তোমারে দেবো গো তা-ও, আমাদের যদি তোমার সঙ্গে নৌকায় তুলে নাও। নৌকা তোমার
Continue readingস্মৃতি বড় উচ্ছৃঙ্খল – পুর্ণেন্দু পত্রী
পুরনো পকেট থেকে উঠে এল কবেকার শুকনো গোলাপ । কবেকার ? কার দেওয়া ? কোন মাসে ? বসন্তে না শীতে ? গোলাপের মৃতদেহে তার পাঠযোগ্য স্মৃতিচিহ্ন নেই । স্মৃতি কি আমারও আছে ? স্মৃতি কি
Continue readingনগ্ন নির্জন হাত – জীবনানন্দ দাশ
আবার আকাশে অন্ধকার ঘন হয়ে উঠেছে: আলোর রহস্যময়ী সহোদরার মতো এই অন্ধকার। যে আমাকে চিরদিন ভালোবেসেছে অথচ যার মুখ আমি কোনাদিন দেখিনি, সেই নারীর মতো ফাল্গুন আকাশে অন্ধকার নিবিড় হয়ে উঠেছে। মনে হয় কোনো বিলুপ্ত
Continue readingভালোবাসা, ভারসাম্যহীন – নির্মলেন্দু গুণ
বাঁশির কাছে যে-সুরের প্রত্যাশা সে-প্রত্যাশা পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আমি আমার বাঁশিটি বাজাতে চাই। যে-পর্যন্ত স্থলিত হয়না বীর্য সে-পর্যন্ত জীবের সঙ্গম। জয়ী না-হওয়া পর্যন্ত আমি পরাভাবকে স্বীকার করি না। ভালো না-বেসেই যদি ভালোবাসা পাই। ভাবি,
Continue readingচির অনাবৃতা হে নগ্নতমা – নির্মলেন্দু গুণ
গুণের চির অনাবৃতা হে নগ্নতমা নদীর জল তোমাকে যেভাবে পেয়েছে আমি সেভাবে পাই নি! লাক্স সাবান যেভাবে তোমাকে ছুঁয়েছে আমি সেভাবে ছুঁইনি। মেডলিন লিপস্টিক যেভাবে তোমাকে চুমু খেয়েছে আমি সে সুযোগ পাই নি। প্রসাধন ঘরের
Continue readingপতিগৃহে পুরোনো প্রেমিক – নির্মলেন্দু গুণ
পাঁজরে প্রবিষ্ট প্রেম জেগে ওঠে পরাজিত মুখে, পতিগৃহে যেরকম পুরোনো প্রেমিক স্বামী ও সংসারে মুখোমুখি । প্রত্যাখ্যানে কষ্ট পাই,–ভাবি, মিথ্যে হোক সত্যে নাই পাওয়া । বুকের কার্নিশে এসে মাঝে-মধ্যে বসো প্রিয়তমা, এখানে আনন্দ পাবে, পাবে
Continue readingস্বাধীনতা, উলঙ্গ কিশোর – নির্মলেন্দু গুণ
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত বেরিয়ে এসেছো পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবী হও। তোমার পরমায়ু বৃদ্ধি পাক আমার অস্তিত্বে, স্বপ্নে, প্রাত্যহিক বাহুর পেশীতে, জীবনের রাজপথে, মিছিলে মিছিলে; তুমি বেঁচে থাকো, তুমি দীর্ঘজীবী হও। তোমার হা-করা
Continue readingতোমায় আমি – জীবনানন্দ দাশ
তোমায় আমি দেখেছিলাম বলে তুমি আমার পদ্মপাতা হলে; শিশির কণার মতন শূন্যে ঘুরে শুনেছিলাম পদ্মপত্র আছে অনেক দূরে খুঁজে খুঁজে পেলাম তাকে শেষে। নদী সাগর কোথায় চলে ব’য়ে পদ্মপাতায় জলের বিন্দু হ’য়ে জানি না কিছু-দেখি
Continue reading